ওবায়দুল কাদেরকে পালাতে সহযোগিতায় যুবদল নেতারা

প্রকাশ: ০৯ জানুয়ারি ২০২৫ | ০২:৪২

ফেসবুক পোস্টে নিজ দলের নেতাদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তোলা ছিল বছর কয়েক ধরে তাঁর নিয়মিত কাজ। দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজ ও শীর্ষ নেতাদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কুরুচিপূর্ণ পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে সম্প্রতি বহিষ্কৃত হন যশোর জেলা যুবদলের প্রচার সম্পাদক এসকেন্দার আলী জনি।

https://dreadfullyemulateconservation.com/jj1i6rgkr?key=4f8fbee4048e8373ad336eca9d9268a8

তবুও নিবৃত করা যায়নি তাঁকে। বরং বহিষ্কারের পর নিয়মিত ফেসবুক লাইভে এসে বিষোদ্গারের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছেন। সর্বশেষ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে ভারতে পালাতে সহযোগিতা করেছেন যশোর যুবদল নেতারা– এমন অভিযোগ তুলে গত মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লাইভ করেছেন তিনি। এ নিয়ে বিব্রত বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, জনি ছিলেন যশোর জেলা বিএনপি অফিসের কেয়ারটেকার। দলীয় ও কেন্দ্রীয় নেতাদের সুনজরের সুবাদে পদ পেয়ে যান জেলা যুবদলের প্রচার সম্পাদকের। এর পর দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের করতে থাকেন অবমূল্যায়ন।

বিভিন্ন সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দলীয় নেতাকর্মীকে নিয়ে বিষোদ্গার শুরু করেন। তাঁর হাত থেকে রক্ষা পাননি জেলা বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলসহ সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতারাও। জেলা বিএনপি ও যুবদলের লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৭ ডিসেম্বর তাঁকে বহিষ্কার করে যুবদলের কেন্দ্রীয় সংসদ। বহিষ্কারের পর একের পর এক দলীয় নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ফেসবুকে কুরুচিপূর্ণ পোস্ট করার পাশাপাশি লাইভে এসে গুরুতর নানা অভিযোগ উত্থাপন করতে থাকেন এ বহিষ্কৃত নেতা। 

গত মঙ্গলবার রাতে তিনি ফেসবুক লাইভে অভিযোগ তোলেন, জেলা যুবদলের সভাপতি তমাল আহম্মেদ ও সাধারণ সম্পাদক আনসারুল হক রানা যশোর যুবদলকে যুবলীগে পরিণত করেছেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই শেখ হেলালসহ তাঁর পরিবারের চার সদস্যকে ভারতে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেন আনসারুল হক রানা। তাঁর এই লাইভ বক্তব্যটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। 

এদিকে বারবার দলীয় নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন কূরুচিপূর্ণ মন্তব্য করায় দলের নেতাকর্মীর মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। বিব্রত বোধ করছেন তারা। জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আনসারুল হক রানা বলেন, ফ্যাসিবাদী শাসকের অত্যাচারে ১৫ বছর বাড়িতে রাত কাটাতে পারিনি। বিনা অপরাধে আমাকে অসংখ্য মামলার আসামি করা হয়েছে। জেল খেটেছি, হামলার শিকার হয়েছি অনেকবার। তাই স্বৈরাচারের প্রধান হোতাদের বেআইনিভাবে সহযোগিতা করার মতো নিকৃষ্ট কাজে জড়িত থাকার প্রশ্নই ওঠে না।

তিনি বলেন, ওবায়দুল কাদেরকে ভারতে পালাতে সহযোগিতা করা বাবদ অর্থের লেনদেন নাকি সিঙ্গাপুরে বসে করা হয়েছে এবং আমিও সেখানে ছিলাম বলে জনি দাবি করেছে। তাঁর দাবি, যদি এটা সত্যি হয়, তাহলে তো আমার পাসপোর্টে সিঙ্গাপুরের ভিসা থাকবে, তাই না?

জেলা যুবদলের সভাপতি এম তমাল আহমেদ বলেন, অভিযুক্ত বহিষ্কৃত যুবদল নেতা মাদক সেবনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে বলে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। এ কারণেই হয়তো সে মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপনের মধ্য দিয়ে নেতাদের চরিত্র হরণের চেষ্টা করছে।

জেলা বিএনপির সদস্য সচিব দেলোয়ার হোসেন খোকন বলেন, যুবদল থেকে বহিষ্কৃত জনির কর্মকাণ্ডে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা বিব্রত। তাঁর বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারেও চিন্তা করছি।  

তবে বহিষ্কৃত যুবদল নেতা এসকেন্দার আলী জনি বলেন, যোগ্যতা দেখে দল আমাকে প্রচার সম্পাদক করেছে। দলে সবসময় নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলাম। সুবিধা আদায়কারী নেতাদের মুখোশ উন্মোচন করছি বলেই তাদের শত্রু আমি; আমাকে তারা বহিষ্কার করেছে, যা অন্যায়। তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দৃষ্টি আকর্ষণ করে জেলা যুবদলের সভাপতি-সম্পাদকের অভিযোগগুলো তদন্তের অনুরোধ জানান।

Countdown Timer
00:01

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বাংলা ব্লগের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url