তারেক রহমানের যে ‘বার্তা’ নিয়ে ফিরলেন সালাহউদ্দিন
দুপুর সোয়া ১২টার দিকে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে ঢাকা পৌঁছান এই বিএনপি নেতা। এর আগে গত শনিবার লন্ডনের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে তিনি রওনা হন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের ডাকে গত ২০ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্য যান সালাহউদ্দিন আহমেদ। লন্ডনে বড় মেয়ের বাসায় ছিলেন তিনি। সফরকালে বিএনপির আগামী দিনের রাজনীতি, আগামী জাতীয় নির্বাচনসহ বিভিন্ন বিষয়ে তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।
যেখানে তারেক রহমানের দেশে ফেরা এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সম্ভাব্য লন্ডন সফরের বিষয়টিও আলোচনায় এসেছে বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা। এ ছাড়াও যুক্তরাজ্য বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গেও সালাহউদ্দিনের বৈঠক হয়।
তারেক রহমান কী বার্তা দিয়েছেন, তিনি কবে দেশে ফিরবেন- এমন প্রশ্নের জবাবে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রাখার জন্য, ঐক্যবদ্ধ থাকার জন্য আমাদের সব প্রয়াস গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছেন। অন্যথায় ফ্যাসিবাদবিরোধী অপশক্তি ও তাদের দোসররা আশকারা পেতে পারে, সেটি আমরা বুঝতে পেরেছি। ইতোমধ্যে সে রকম বিভিন্ন কর্মকাণ্ড জাতি প্রত্যক্ষ করেছে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অবশ্যই দেশে ফিরবেন। তবে এখনো পর্যন্ত তারেক রহমানের দেশে ফেরার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ আমরা তৈরি করতে পারিনি। সেজন্য অল্প কিছু সময় লাগবে। অনুকূল পরিবেশ হলে শিগগিরই তিনি দেশে ফিরবেন। তারেক রহমানের সঙ্গে কী কী বিষয়ে কথা হয়েছে, এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সালাহউদ্দিন বলেন, আপনারা ধীরে ধীরে এ বিষয়ে জানতে পারবেন।
পিআর পদ্ধতির নির্বাচন চালু করতে প্রয়োজনে গণভোট দিন : সেলিম উদ্দিন
নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কিত সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই নীতি-নির্ধারক বলেন, নির্বাচনমুখী রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির সব সময় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি থাকে। পরিবেশ-পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে আমাদের সে নির্বাচনী প্রস্তুতি প্রতিক্ষণেই রয়েছে।
সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে ফ্যাসিবাদবিরোধী যে জাতীয় ঐক্য এবং গণঐক্য গড়ে উঠেছে- সেটা রাজনৈতিক সংস্কৃতি হিসেবে চর্চা হওয়া এখন আমাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ হওয়া উচিত। এর অন্যথা হলে আবার ফ্যাসিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। তাই যে কোনো কৌশল কিংবা বাহানায় নির্বাচনের বিষয়ে বিলম্ব করার যে কোনো কৌশল জনগণ প্রত্যাখ্যান করবে। সুতরাং যত শিগগিরই সম্ভব গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠার দিকে আমাদের মনোযোগ দেওয়া উচিত।
তিনি আরও বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার, আইনি সংস্কার এবং মাঠের সংস্কারের জন্য আমাদের বেশি সময় লাগার কথা নয়। জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সংস্কার কার্যক্রম এবং নির্বাচনের প্রস্তুতি একই সঙ্গে চলতে পারে। এর মধ্য দিয়ে যত দ্রুত সম্ভব আমরা যাতে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যেতে পারি, সেদিকে মনোযোগ দেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই।
নির্বাচনের তারিখ সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা যেটা বলেছেন সেটা একটা ধারণা। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে একটি নির্দিষ্ট রোডম্যাপ দেওয়াই হবে উত্তম কাজ। ভাসা ভাসা একটা সময়ের ধারণা দেওয়ার বিষয়টি সব পক্ষকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি। আমরা মনে করি, এখন সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত একটি রোডম্যাপ ঘোষণা করাই হবে সরকারের জন্য সবচেয়ে জরুরি কাজ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন দল গঠনের উদ্যোগ সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, নতুন রাজনৈতিক শক্তির উদয় হলে আমরা স্বাগত জানাব। তবে তা কিংস পার্টির মতো এবং সরকারি সহযোগিতায় না হয়ে সুষ্ঠু ধারায় রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে হলে ভালো হয়।
সংবিধান নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সংবিধান কখনো কবর দেওয়া যায় না। পরিবর্ধন বা সংশোধন হতে পারে। সেটাই হবে সর্বোত্তম পন্থা।
বাংলা ব্লগের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url